Tuesday, June 24, 2014

মুসলিম উম্মাহর ক্ষতিসাধনে ইরানের ভূমিকা !

মুসলিম উম্মাহর ক্ষতিসাধনে ইরানের ভূমিকা !
LINK

আমরা কি অন্তত একটিবার ভেবে দেখেছি ইরান এযাবত ইসলামের কী কী ক্ষতি করেছে?
এই ব্যাপারে দীর্ঘ আলোচনার প্রয়োজন, আমরা অত্যন্ত সংক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন মুসলিম দেশসমুহে ইরানের চক্রান্তের কথা তুলে ধরবো।

আমরা একথা ভালোভাবে জানি উনবিংশ শতাব্দির শুরুতে বিশ্বের কোথাও শীয়া-সুন্নী সহিংসতার খবর পাইনি। শীয়া-সুন্নীরা তখন পরস্পরে কাধে কাধ মিলিয়ে চলতেন। যার কারণে জিন্নাহের মতো একজন শীয়া যখন পাকিস্তানের স্থপতি হন তখন কোনো সুন্নী মুসলমান শীয়া হওয়ার কারণে তার বিরোধিতা করেন নি।
মুসলিমবিশ্বে শীয়া-সুন্নী সহিংসতা শুরু হয়েছে ১৯৭৯ সালে ইরানে খোমেনির নেতৃত্বে শীয়াবিপ্লব হওয়ার পর থেকেই । খোমেনি যখন ফ্রান্সের নির্বাসিনী জীবন ত্যাগ করে ইরানের ধর্মীয়নেতায় পরিণত হন, তখন মুসলিমবিশ্বের বিপ্লবীরা তাকে সাধুবাদ ও অভিনন্দন জানান । কিন্তু খোমেনি সে অভিনন্দনের জবাব দেন সাহাবায়ে কেরামের বিরুদ্ধে কাশফে আসরার নামক বই লিখে । এই বইয়ে তিনি অশ্রাব্য ভাষায় সাহাবায়ে কেরাম রাযি. কে গালি দেন। এবং এই বই ইরানি দুতাবাসের মাধ্যমে সারা মুসলিমবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে সচেষ্ট হোন । বিভিন্ন মুসলিমদেশ সমুহে নিজের মতবাদ চালু করার সব ধরনের ছল-চাতুরির আশ্রয় নেন। এমনকি বিভিন্ন সুত্রে জানা যায় যে, খোমেনি বলেছেন, সুন্নীরা হচ্ছে ইরানের মতবাদ প্রচারের প্রথম বাধা, তাই প্রথমে এদেরকে শেষ করে দিতে হবে। আমরা নিম্নে বিভিন্ন মুসলিম দেশে ইরানি আগ্রাসনের কথা উল্লেখ করব।
ইরানঃ
রাজধানী তেহরানে ইয়াহুদিদের উপাসনালয় এবং খৃষ্টানদের গীর্জা থাকলেও সুন্নী মুসলমানদের কোনো মসজিদ নেই! ইরানের বেলুচিস্তান এবং সিস্তান হচ্ছে সুন্নি অধ্যুষিত, কিন্তু সেখানকার মুসলমানরা খুবই কষ্ট আছেন। সরকারি চাকুরিতে সুন্নির অবস্থায শূন্যের কোঠায়। তাই বেলুচিস্তানের মুসলমানরা দীর্ঘদিন নির্যাতিত থাকার পর জাস্টিস আর্মি নামে একটি সশস্ত্র গ্রুপ খুলেছেন। কদিন পুর্বে যে ইরানের সীমান্তে ১৭ সেনা মারা গেছে, বলা হয় এটা তাদেরই কাজ।
সৌদী আরবঃ
খোমেনি ক্ষমতায় আসার পরপরই মক্কায় পবিত্র কাবা চত্বরে শীয়াদের মাধ্যমে একটি বিশৃংখলা তৈরি করেন। পরে সৌদী সরকার তাদেরকে পাকড়াও করে মৃত্যুদন্ড দেয়।তখন থেকেই ইরানের সাথে সৌদী আরবের কুটনৈতিক সম্পর্কের ছেদ হয়।
পাকিস্তানঃ
পাকিস্তানের ১৬% শীয়ারা ইরানের আস্কারা পেয়ে শীয়া মতাদর্শ প্রসারে ততপর হয়। তখন সিপাহে সাহাবা নামে মুসলমানদের একটি সংগঠনের জন্ম হয়, যারা শীয়াদের মুখোশ উন্মোচন করা শুরু করেন, পরবর্তীতে শীয়ারা এ সংগঠনের আমীর ও উলামাদের শহীদ করা শুরু করে। শীয়াদের হাতে শহীদ হওয়া কয়েকজন পাকিস্তানি আলেমদের মধ্যে হচ্ছেন, শহীদে ইসলাম মাওলানা ইউসুফ লুধিয়ানভি রাহ. , মাওলানা হক নওয়াজ জঙভি রাহ. মাওলানা হাবীবুল্লাহ মুখতার রাহ. , মাওলানা আজম তারেক রাহ. এবং মাওলানা জিয়াউর রহমান ফারুকি রাহ. ,প্রমুখ ।
আফগানিস্তান ঃ
রাশিয়া নেতৃত্বাধীন সভিয়েতরা চলে যাওয়ার পর ইরান আব্দুর রশীদ নামক শীয়ার পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া শুরু করে। তালেবানের উত্থানের পর ইরান এই দোস্তামের মাধ্যমে মাজার-ই-শরীফে প্রচুর তালেবানকে শহীদ করে। তালেবানদের বিজয় যখন সারা দেশে প্রতিষ্ঠিত তখন ইরান উত্তারাঞ্চলীয় জোটকে ইমারাতে ইসলামিয়্যাহের মোকাবেলায় দাড় করায়। তাদেরকে ইরান অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে। মুজাহিদরা নর্দান এলায়েন্সের প্রধান আহমদ শাহ মাসুদকে হত্যা করেন তখন তাকে সাথে সাথে ইরান চিকিতসার জন্যে নেওয়া হয়। এই জোটের উপর ভর করেই আমেরিকা তালেবানদের পতন ঘটায় । তালেবানের পতনের পর আহমিনেজাদ বলেছিল, এটা আহমদ শাহ মাসুদের শাহাদতের বিজয়।
ইরাকঃ
সাদ্দাম ফাসির পুর্বে বলেছিলেন, আমি আমেরিকান গোয়েন্দা এবং ইরানের কাছে পরাজিত হয়েছি । সাদ্দামের ফাসির পর শীয়ারা আনন্দ মিছিল বের করে। ইরানের সাহায্যে ইরাকে মুকতাদা সদর একটি সশস্ত্র বাহিনী গঠিন করে। এটা সেখানে সুন্নী মুসলমানদেরকে গণহত্যা শুরু করে। ইরান নিজেকে মার্কিন বিরোধী প্রচার করে, অথচ ইরাকের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আমেরিকার দালাল শীয়া নুরি মালিকির সাথে ইরানের গলায় গলায় ভাব,বাহিরে মার্কিন বিরোধিতা আর ভেতরে এ অবস্থা কীসের আলামত? আর এখন তো ইরানের আসল চেহারা প্রকাশ পেয়েছে।
সিরিয়াঃ
ইরানে খোমেনি বিপ্লবের পর সিরিয়ার ইখওয়াননেতারা খোমেনির কাছে সাহায্যের জন্যে যান। কিন্তু খোমেনি তাদের সাহায্য দিলোই না, উল্টো ইখওয়ানিদের সব তথ্য বাশারের পিতা কসাই হাফিযের কাছে প্রকাশ করে দিল। ফলে ১৯৮২ সালে সিরিয়ার ইখওয়ানিদের ঘাটি হামায় চলল ইতিহাসের ভয়ংকরতম ম্যাসাকার।
সিরিয়া সম্পর্কে ইরানের বর্তমান ভূমিকা তো সবারই জানা।
লেবাননঃ
ইরানের শীয়ারা লেবাননের শীয়াদের মাধ্যমে একটি সংগঠনের জন্ম দেয়, যার নাম হিজবুল্লাত.! কসাই বাশারের পাপে সমান পাপী। যখন হিজবুল্লাতের সদস্যরা দলে দলে সিরিয়ায় যাচ্ছিল তখন সেদেশে বিশিষ্ট আলেম শায়খ আহমদ আসির এর তীব্র বিরোধিতা করেন, ফলে হিজবুল্লাহ তার মসজিদে হামলা চালায়। হিজবুল্লাহর চরম অপকর্ম দেখে লেবাননে জন্ম হয় আব্দুল্লাহ আযযাম ব্রিগেডের, যারা লেবাননে ইরানি দুতাবাসে হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে।
বাহরাইনঃ
ইরান আরববসন্তের সময় চেয়েছিল সেদেশের ৭০% শীয়ার মাধ্যমে সেদেশের সুন্নী শাসককে উতখাত করতে। সিরিয়ার শাসক শীয়া তাই ইরান বাশারের সাথে, আর বাহরাইনের জনতা শীয়া, তাই ইরান জনতার পাশে।
ইয়ামেনঃ
শায়খ আওলাকি রাহ. এক বক্তব্যে বলেছেন, ইরান ইয়ামেনে তাদের আগ্রাসনের বিস্তার করছে।
বাংলাদেশঃ
বাংলাদেশে ইরানি মতবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছে রেডিও তেহরান, খোমেনি ফাউন্ডেশন এবং ইরানি কালচ্যারাল ফোরাম।
আর সাথে আছে ইরানি ভাবাদর্শের তথাকথিত ইসলামি দল।
ইরানের আরো কুতসিত চেহারা আমরা দেখলাম, লেডি হিটলারকে অভিনন্দন জানানোর মাধ্যমে ।
ইরান যখন উল্লেখিত দেশসমুহে অশান্তি সৃষ্টি করে ফেলেছে, তখন সে সাধু সেজে মার্কিন ব্লকে যোগ দিচ্ছে।
আর আমেরিকা তার মিত্রতা রূপে ইরানকে বড় প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ করছে। এখন ইরান-রাশিয়া-আমেরিকা একজোট হয়ে উম্মাহের মুজাহিদদের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে।

1 comment:

  1. শিয়া সুন্নী বিরোধ কতটা এবং তার নিষ্পত্তির সম্ভাবনা কতটুকু ------ এ ব্যাপারে পক্ষে / বিপক্ষে যারা মত দেন সেগুলো একসাথে করার লক্ষ্য নিয়ে এই অনলাইন ব্লগ সাইট চালু করলাম

    ReplyDelete